বাক্যের অন্তর্ভুক্ত পদগুলো উপযুক্ত স্থানে বসানোই পদ সংস্থাপনার ক্রম। একে কেউ কেউ পদক্রম বলে থাকেন।
নিয়মাবলি
১. সাধারণ বাক্যের প্রথমে সম্প্রসারকসহ উদ্দেশ্য (বা কর্তা) এবং বাক্যের শেষে সম্প্রসারকসহ বিধেয় (বা
ক্রিয়াপদ) বসবে। যেমন –
মনোযোগী ছাত্ররাই রীতিমত পড়াশোনা করে।
(সম্প্রসারক) (কর্তৃপদ) (সম্প্রসারক) (ক্রিয়াপদ)
কিন্তু বাক্যকে শক্তিশালী করার জন্য এর ব্যতিক্রমও হতে পারে। যেমন –
লোকটি ছিল অত্যন্ত চতুর ।
২. সম্বন্ধ পদ বিশেষ্যের পূর্বে বসবে । যেমন – “ ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে।”
অর্থ সঙ্গতি রক্ষার জন্য বা ছন্দের অনুরোধে সম্বন্ধ পদ পরেও বসতে পারে। যেমন –
“হে আদি জননী সিন্ধু, বসুন্ধরা সন্তান তোমার।”
৩. কারক-বিভক্তিযুক্ত পদ বা অসমাপিকা ক্রিয়াপদ বিশেষণের আগে বসে। যেমন লোকটি ব্যবহারে খুবই ভদ্র। রাজশাহীর আম খেতে চমৎকার ।
৪. বিধেয় বিশেষণ সর্বদাই বিশেষ্যের পরে বসে। যথা : লোকটি যে জ্ঞানী তাতে সন্দেহ নেই ।
৫. বাক্যের প্রথমে কর্তা, পরে কর্ম এবং শেষে ক্রিয়াপদ বসে। যেমন – আমি ‘শাহনামা' পড়েছি।
(ক) কবিতায় এর ব্যতিক্রম হতে পারে। যেমন ‘লহ নমস্কার, সুন্দর আমার। ’
(খ) বাক্যে জোর দিতে গেলেও নিয়মের ব্যতিক্রম হতে পারে। যেমন – জানি, তোমার মুরোদ কতটুকু।
৬. বহুপদময় বিশেষণ অবশ্যই বিশেষ্যের পূর্বে বসে। যেমন - তোমার দাঁত বের-করা হাসি দেখলে সবারই পিত্ত জ্বলে যায় ৷
বাক্যে ‘না ' বা ‘নে' অব্যয়ের ব্যবহার
(ক) সমাপিকা ক্রিয়ার পরে বসে । যথা – আমি যাব না । আমি ভাত খাই নে, রুটি খাই।
(খ) অসমাপিকা ক্রিয়ার পূর্বে বসে। যথা – না চাইতে দানের কোনো মর্যাদা নেই ।
(গ) বিশেষণীয় বিশেষণ রূপে বিশেষণের পূর্বে বসে । যেমন না ভালো, না মন্দ।
(ঘ) ‘যদি’ দিয়ে বাক্য আরম্ভ করলে ‘না’ সমাপিকা ক্রিয়ার পূর্বে বসে । মেযন : তুমি যদি আজ না যাও, তা
হলে খুবই ক্ষতি হবে।
‘না' (নঞ ব্যতীত) অন্য অর্থে
ক. বিকল্পার্থে : জিজ্ঞাসাবাচক বাক্যে – তুমি বাড়ি যাবে, না আমি যাব ? : খ. অনুরোধ বা আদেশ অর্থে (নিরর্থকভাবে বাক্যের শেষে) : একটা গান গাও না ভাই ৷
আরও দেখুন...